মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি.
মানিকগঞ্জে বাবাকে ভুল বুঝিয়ে ভাইয়ের ঘরে জায়গাসহ ভিটি জমি দলিল করে বড় ভাইকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করেছে সৎ বোনেরা ।
গত শনিবার (৬ই মে)দুপুরে সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মকিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে । ভূক্তোভূগী লাভলু মিয়া একই গ্রামের ওয়াজুদ্দিনের ছেলে ।
এ ঘটনায় সৎ বোন পুলিশ সদস্য লাখী আক্তার ও বোন জামাই ইব্রাহিম,লাবনী আক্তার এবং সৎ মা ছালেহা বেগমসহ মোট ৭ জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন লাভলু মিয়া ।
জানা যায়,লাভলু’র বাবা ওয়াজুদ্দিন দুইটি বিবাহ করেন ।প্রথম স্ত্রী রাবেয়া মারা গেলে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তিনি। প্রথম পক্ষে এক ছেলে লাভলুসহ দুই মেয়ে ও দ্বিতীয় পক্ষে আরো দুই মেয়ে রয়েছে ওয়াজুদ্দিনের ।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, “ লাভলু তার বাবা ওয়াজুদ্দিনের অনুমতিক্রমে পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বাবার অনুমদিত জায়গায় ৩০ ফুট লম্বা ও ১৯.৫০ ফুট চওড়া করে ২ কক্ষ বিশিষ্ট বারান্দায় একটি কেবিনসহ ঘর নির্মাণ করে স্থানীয়দের জ্ঞাতসারে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে ।লাভলুর সৎ বোনেরা বাবাকে ভুল বুঝিয়ে সম্প্রতি লাভলুর ঘরের জায়গাসহ মেট ১২ শতাংশ জায়গা লাখী ও লাবনী তাদের নামে দলিল করে নেয় । লাভলু বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে আসামীগণ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বে-আইনি জনতাবদ্ধে লাভলুর বসত ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে লোহার শাবল,বাশ,গাছের ডাল দিয়ে বাইরাইয় লাভলুর মাথা,ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা যখম করে । লাভলুর স্ত্রী আয়শা আক্তার ফিরাতে গেলে বোন জামাই ইব্রাহিম তার চুলের মুঠি ধরে চর-থাপ্পর ও টানা হিচড়া করে শ্লীলতাহানি করে ।অন্যান্য আসামীগন লাভলুর ২ কিশোর ছেলেকে কিল,ঘুষি, লাথি মের জখম করে ।পরে লাভলুকে জোরপূর্বক ঘরের বাহিরে এনে ইব্রাহিম বুকের উপর বসে দুই হাতে গলা চেপে ধরে ।দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে শরীরের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ঝামটা দিয়ে ছুটে প্রাণে রক্ষা পায় লাভলু ।তবে লাভলুর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় ইব্রাহিম ।ঘরের ভিতরে থাকা আলমারিতে রক্ষিত ১ লক্ষ টাকা নিয়ে যায় লাখী । এছাড়াও আলমারী,শোকেজ,স্টীলের সিন্দুক,টেলিভিশন,সাউন্ডবক্স নিয়ে যায় ও ক্ষতি সাধন করে ।সেসময় লাভলু ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ডাক চিৎকারে আশপাশের প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে এবিষয়ে মামলা করলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ।”
স্থানীয় হেলাল মিয়া জানান,চিৎকারের শব্দে লাভলুদের বাড়িতে গিয়ে দেখি আনেক লোকজন জড়ো হয়েছে ।লাভলুর শরীরের জামা কাপড় ছেড়া ।ওর বউয়ের শরীরে মাটি । খুব মারছে ছেলেটারে । পরে ঘরে তালা দিয়ে লাভলুকে বউ পুলাপনসহ বের করে দিছে ।আমি প্রতিবাদ করায় আমার নামেও মাললা দিছে।আমরা এলাকাবাসী এই ঘটনার তিব্র নিন্দা জানাই । আর সবাই এই অন্যায়ের প্রতিবাদ স্বরুপ গণসাক্ষর দিয়েছি।”
প্রতিবেশী বাদশা মিয়া জানান,“ লাভলুর ঘরের জায়গাসহ বাড়ির জমি লাখী আর লাবনীর নামে লিখে নিছে ।লাভলুর বড় আরো দুই বোন আছে । কাউরে কিছু না দিয়ে দ্বিতীয় ঘরের দুই মেয়েকে সম্পত্তি দেয়ায় আমি সহ আমার কয়েকজন শরীকরা মিলে ওয়াজুদ্দিন চাচার সাথে কথ্ বলতে গেলে সে আমাদের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে ।পরে আপোষের কথা বলে মীমাংসা না করে উল্টো লাভলু,লাভলুর বউ-শাশুড়ীসহ আমাদের নামেও মামলা দিছে ওয়াজুদ্দিন ।”
ভূক্তভূগী লাভলু মিয়া জানান,আমার বউ বাচ্চাসহ আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিছে । আমাকে আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে আমার বাবাকে ভুল বুঝিয়ে আমার ঘরের জায়গাসহ জমি লিখে নিছে আমার সৎ বোন লাখী আর লাবনী । আমার আলমারি থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে গেছে । আর গলায় সোনার চেইন ছিল সেটাও নিয়ে গেছে । আমি থানায় গিয়ে মামলা করতে পারি নাই । পরে স্থানীয় ভাবে আপোষ করা কথা হইছে । কিন্তু আপষ মীমাংসা না করে চালাকি করে উল্টো আমার নামেই মামলা দিয়েছে ।আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার ও আমার অধিকার চাই ।”
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্তদের সাঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি ।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২০ দেশ প্রকাশ 24
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা/সংবাদ বা ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি ।
Leave a Reply