রবিবার(২৬শে মার্চ) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ৪টা পর্যন্ত জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে এই অনিহা ও অনিয়মের চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাল্লা ইউনিয়নের বড় হাপানিয়া সিসি, কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কুশিয়ারচর কমিউনিটি ক্লিনিক, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ঈশাখাবাদ কমিউনিটি ক্লিনিক, বাহিরচর কমিউনিটি ক্লিনিক, বলড়া ইউনিয়নের দানিস্তপুর কমিউনিটি ক্লিনিক,শিবালয়ের মালুচী সাব সেন্টার, বয়ড়া ইউনিয়নের আন্ধারমানিক ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও হারুকান্দি ইউনিয়নের ভেলাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উত্তোলন করা হয়নি জাতীয় পতাকা।
এছাড়া রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় পতাকা টানাতে নিজের দায় সারাতে বাশের ৩হাতের একটা কাড়াইল/ কান্ডাইলের সাথে বারান্দার উপর পতাকা উত্তোলন করে রাখা হয়েছে। যা জাতীয় পতাকা অবমাননাকর। হরিরামপুর ডিজিটাল পোষ্ট সেন্টারেও বাঁশের উপর পতাকা টানিয়ে কোন রকমে ঠেকনা/ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে।
এছাড়া সদর উপজেলার জাগীর কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে । যেখানে দেখা যায় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় শিক্ষার্থীরা জুতা পায়ে শিক্ষক-শিক্ষীকাদের সাথে। জুতা পায়ে শহিদ মিনারে ফুল দেয়ার ছবিটি নিয়ে ইতমধ্যে এলাকায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে ।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ভিজিটর কুলসুম আক্তার ভুল স্বীকার করে বলেন, “এমনটি আর কখনো হবেনা।”
কুশিয়ারচর কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্বে থাকা সাথী খাতুনের কাছে পতাকা উত্তোলন করেননি কেন, জানতে চাইলে বলেন তিনি বলেন, “আমি পতাকা উত্তোলন করেছি একটু পরে। এজন্যই দেরি হয়েছে।”
শিবালয়ের মালুচী সাব সেন্টারের দায়িত্বরত উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,“ এখানকার প্রধান দায়িত্ব আমার না, সম্ভাবত পৃথা নামের কেউ হবে। একই স্থানে কাজ করা একে অপরের নাম অথবা চেনা জানা নেই কেন, এমন প্রশ্নে তিনি লজ্জাবোধ করে এড়িয়ে যান।”
এবিষয়ে কথা বলতে জাগীর-কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায় । পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি ।
জাগীর-কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন,“ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শহিদ মিনারে জুতা পরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা খুবই লজ্জাজনক । এতে করে শহিদদের অপমান করা হয়েছে ।আবার এসব ছবি প্রধান শিক্ষক তার ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেছে ।একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এমনটা আশা করা যায়না ।”
হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ বলেন,“ জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করা রাষ্ট্রদ্রোহীতার সমান।”
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাঈনুল ইসলাম বলেন, “জাতীয় দিবসে সুর্যোদয়ের সাথে সাথে পতাকা উত্তোলন করতে হবে, এটা প্রচলিত রীতি এবং নিয়মিত নির্দেশনা দেয়া আছে, জাতীয় পতাকা অবশ্যই উত্তোলন করতে হবে, যদি পতাকা উত্তোলন না করে থাকে, তবে তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”
মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন মোঃ মোয়াজ্জেম আলী খান বলেন,“ জাতীয় দিবসগুলোতে কোন নির্দেশনা প্রয়োজন নেই, দেশপ্রেমের একটা ব্যাপার থাকে, ব্যক্তিগত ভাবে হলেও তো পতাকা উত্তোলন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।”
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, “ জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করার কোন কারন নাই। যদি কেউ এমনটি করে থাকে, তবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।”
Leave a Reply