কম খরচে অল্প সময়ে ফলন বেশি ও ভালো বাজারমূল্য পাওয়ায় ভুট্টা চাষে ঝুঁকছে মানিকগঞ্জ জেলার অধিকাংশ কৃষক। এক বিঘা জমিতে ২০-২২ হাজার টাকা খরচ করে ভুট্টা পাওয়া যায় প্রায় ৩৫ মণ। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা। দেশীয় জাতের ভুট্টায় তেমন লাভ না হওয়ায় হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করছে মানিকগঞ্জের কৃষকরা ।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই ভুট্টার বীজ বপন করেছিলো কৃষকেরা।এখন গাছগুলো বেশ বড় ও গাছে ভূট্টা পরিপক্ক হতে শুরু করেছে। এখন ক্ষেতগুলোর পরিচর্যা ও নিড়ানি এবং সেচ কাজ চলছে।ভারেঅ ফলন পেতে ভুট্টা চাষে কৃষকেরা পটাশ, ডিএপি, জিপসাম, সালফার ও ফোরাডান, ইউরিয়া, দোস্তা ইত্যাদি সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেছেন।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বছরে দু’বার এই হাইব্রিড ভুট্টার চাষ হয়। রবি মৌসুমে ভুট্টা কৃষকের ঘরে তুলতে সময় লাগে ৫ মাস। পরবতীতে যে ভুট্টা আবাদ করা হয় সেটি আড়াই থেকে তিন মাসে পাওয়া যায়। প্রথমবার ভালো ও পরে কম ফলন হয়।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চর মকিমপুর গ্রামের ভুট্টা চাষি মোঃ মনির হোসেন বলেন, সার, কীটনাশক ও সেচের দিক থেকে দেশি জাতের ভুট্টার চেয়ে হাইব্রিড ভুট্টায় খরচ কম, তাই আমি সহ এ অঞ্চলের অধিকাংশ চাষিরা হাইব্রিড ভুট্টার চাষ করেন।
চরমত্ত গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান বলেন, ভুট্টায় কিছু রোগ আছে। এর মধ্যে পাতায় পোকা লেগে পাতা খেয়ে ফেলে- এটি বেশি ক্ষতিকর। এ কারণে ১ মাস বয়সে কীটনাশক দিতে হয়। ক্ষেতে সেচ দেওয়া পর্যাপ্ত পরিমাণ সার দিলে উৎপাদন ভালো হয় । অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টার আবাদ লাভজনক তাই আমি ভুট্টার আবাদ করি।
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, মানিকগঞ্জে ভূট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৫০০ হেক্টর। খরিপ মৌসুমে আমাদের টার্গেট সাড়ে সাত হাজার হেক্টর। সারা বছর প্রায় ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়। এর মধ্যে ৮৯.৯৯ ভাগ হাইব্রিড।
তিনি আরো বলেন, ভুট্টার বাজার বেশি থাকাতে কৃষকরা ভুট্টা চাষে নজর দিচ্ছেন। সময় কম লাগে, বাজারমূল্য বেশি পায় এ জন্য ঢাকা বিভাগের মধ্যে মানিকগঞ্জে বেশি ভুট্টা চাষ হয়।
সারা দেশে ভুট্টার চাহিদা প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। গত বছর মানিকগঞ্জ জেলাতেই প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টার আবাদ হয়েছে। ভুট্টার চাষ বেড়ে যাওয়াতে এ বছর আবাদ আরও বেড়ে যাবে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply