1. admin@deshprokash24.com : Admin : Asraful Islam
শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১২:১০ অপরাহ্ন

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা দেয়ার অভিযোগ

  • আপডেট সময় : রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক.

মানিকগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে  নিজ বাড়িতে আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ।

সদর উপজেলার বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের পূর্ব মিতরা গ্রামের গোবিন্দ চন্দ্র ঘোষ কর্তৃক হয়রানি মূলক মামলা করার অভিযোগ করেছেন একই গ্রামের মোঃ ফরশেদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ আলী ।

বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত,মানিকগঞ্জ এর সি.আর ১১৬৭/২২ নং মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৪শে নভেম্বর  মোহাম্মদ আলীসহ ৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন গোবিন্দ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, “ কৃষ্ণপট্টি মৌজাস্থিত খতিয়ান-৪৮,দাগ-৮৩,শ্রেণি-নাল,জমির পরিমাণ-১৮ শতাংশ ভূমি পৈত্রিক সূত্রে মালিক হইয়া ভোগ দখল করিতেছে ।আসামীগণ জোরপূর্বক বাদীকে বেদখল করার পায়তারা করিয়া আসিতেছে যা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে । আসামীগণ মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে হুমকি  দিয়া আসিতেছিলো ।এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯শে নভেম্বর রাত আনুমানিক দেড়টায় বাদীর বসত বাড়ী পুড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে বাদীর বসত বাড়ীর দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রক্ষিত রান্নার কাজে ব্যবহৃত শুকনো পাতার স্তুপে,তাহার পশ্চিমে মন্দিরের ঘরে এবং তাহার পশ্চিমে বাদীর বসত বাড়ীতে পেট্রোল ঢালিয়া পাতার স্তুপে আগুণ ধরিয়া দিলে আগুন দাউ-দাউ করিয়া জ্বলিয়া উঠিয়া মন্দিরের ঘরের পূর্বাংশে আগুন ধরিলে সমস্ত বাড়ী-ঘর ধোয়ায় আচ্ছন্ন হইলে বাদী এবং তাহার পরিবারের লোকজনটের পাইয়া ডাক-চিৎকার করিলে আসামীগণ বাদীকে আগুনে পুড়িয়া প্রাণে মারার হুমকি প্রদর্শন করাসহ বাদীকে দেশ ছাড়িয়া চলিয়া যাইতে বলিয়া ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ।”

মোহাম্মদ আলী বলেন,“ কৃষ্ণপট্রি মৌজার উক্ত ১৯ শতক জমির ক্রয়সুত্রে মালিক আমার পিতা মোঃ ফরশেদ আলম ।কৃষ্ণপট্রি মৌজার এস এ ৫৫,আর এস ৮৩, জমির মুল মালিক টেনুরাম ঘোষের স্ত্রী কুবজা সুন্দরী গোপীনির নিকট হতে বিগত ১৩-০৭-১৯৭২ ইং তারিখে ৮০৭১নং দানপত্র দলিলে সুরধনী গোপীনি বর্নিত ভুমির মালিক হন।সুরধনী জমির দখল থাকিয়া বিগত ০৬-০৬-১৯৮৫ ইং তারিখে ২৩৭২ নং দলিল মুলে সম্ভুনাথ ঘোষের নিকট সাব কবলায় বিক্রয় করেন। এরপর সম্ভুনাথ ঘোষ ২৫-১১-১৯৮৬ ইং তারিখে ৮১৪৭ নং দলিল মুলে বর্নিত ১৯ শতাংশ জমি আমার পিতা মোঃ ফরশেদ আলমের নিকট সাব কবলায় বিক্রয় করেন। বর্তমানে জমিটি আমাদের ভোগ দখলেই রয়েছে ।”

মোহাম্মদ আলী আরো বলেন,“ আমি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ‘এ ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবেনা’ বাস্তবায়নে আমার বাবার ক্রয়কৃত জমিটিতে  বিভিন্ন দেশী-বিদেশী প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছের চারা রোপণ করেছিলাম।।আর কয়েকমাস পরেই বাগানে ফলন আসতো । গোবিন্দগং রাতের আধারে আমার বাগান ধ্বংস করেছে।বাগানের পিলার,খোটা,নেট জালের বেড়া চুরি করে নিয়ে গেছে ।এর পূর্বেও তারা বাগানের গাছ-পালা কেটে ফেলেছিলো ।আমার বাগান ধ্বংস করায় আমি আদালতে একটি মামলা করি ।যার সি.আর নম্বর ১১৬৪/২২। ”

তিনি আরো বলেন, “গবিন্দগং জালিয়াতি করে খারিজ মূলে জমির মালিকানা দাবি করায় আমি তাদের খারিজের বিরুদ্ধে মিসকেস করি।পরে বিজ্ঞ সহকারী কমিশনার ভূমি মানিকগঞ্জ মহোদয় গত ২৫শে এপ্রিল’২২ ইং গোবিন্দগংয়ের খারিজটি বাতিল করে দেয়।পরে তারা পুণরায় তদন্তের আবেদন করেছিলো ।তাছাড়া মামলার এজাহারে লিখেছে আমি ডাকাতি মামলার আসামী,আমি পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়েছি ।কিন্তু গোবিন্দর করা মামলা ব্যতিত আমার নামে কোন মামলাই নেই ।আমার নামে মিথ্যা,বানোয়াট ও হয়রানি মূলক মামলা করেছে ।আমি এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি চাই ।”

স্থানিয় মোঃ সামছুল বিশ্বাস জানায়, প্রতিদিনের মতো ১৯শে নভেম্বর শনিবার রাতে তিনি মিতরা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে তার মুদি দোকানে ঘুমিয়ে ছিলো । রাত আনুমানিক সোয় ১টা থেকে পৌনে ২টার দিকে পেশাব করতে উঠে দেখতে পায় মসজিদের পুকুরের পাশে অবস্থিত মোহাম্মদ আলীর বাগানে টর্চলাইট নিয়ে অনেক লোক কিযেন করছে,আর কিছু গোবিন্দ ঘোষের বাড়ির দিকে যাচ্ছে । এমতবস্থায় তিনি মোহাম্মদ আলীকে ফোন করে বিষটি জানালে প্রায় আধঘন্টা পর তার স্ত্রীসহ কয়েকজন প্রতিবেশি নিয়ে দেকানের সামনে আসে আসে।

তিনি আরো বলেন,“আমরা বাগানে গেলে গোবিন্দ,অরবিন্দ,মানিক,শুভ,টিটু ওরা দাও,শাবল,খুন্তি নিয়ে মোহাম্মদ আলীসহ আমাদের ধাওয়া করে ।আমরা ভয়ে ওদের কাছে ভিড়তে পারি নাই ।পরে ওরা গালীগালাজ করে বলে মোহাম্মদ আলী যদি মামলা করে তবে তার স্ত্রী সন্তানকে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে ।ওরা চলে গেলে বাগানে গিয়ে দেখে কিছু খুটি ও গাছ পুকুরে ফেলে রেখে প্রায় সব গাছ সহ সিমেন্টের খুটি ও নেটজালের বেড়া উঠিয়ে নিয়ে গেছে।

এবিষয়ে গোবিন্দ চন্দ্র ঘোষ বলেন, “রাত দেড়টার সময় ওরা পালায় আগুন ধরাই দিছে ।ঘরের সামনে পেট্রোল দিছে আমাদের পুইড়া মারবে ।বাইরে থেকে মোহাম্মদ আলীরা ডাকাডাকি করছে বাইর হ, শোরের বাচ্চারা,বাড়াইয়া মাইরা ফালামু।আপনারা আশেপাশের বাড়িতে জিজ্ঞাসা করেন,তারাতো মিথ্যা সাক্ষি দিবেনা ।”

এবিষয়ে বেতিলা-মিতরা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বলেন, “ মোহাম্মদ আলী গোবিন্দ চন্দ্র ঘোষের খারিজের বিরুদ্ধে মিসকেস করেছিলো ।সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) গোবিন্দ চন্দ্র ঘোষের খারিজটি বাতিল করায় তারা পূণরায় তদন্তের আবেদন করেন।আমি সরজমিন পরিদর্শন করে পুণরায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি ।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দেশ প্রকাশ 24

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা/সংবাদ, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।

Theme Customized By Shakil IT Park