মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার পূর্ব মিতরা গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে বাগান ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছে ।
গত ১৯’নভেম্বর দিবাগত রাতে পূর্ব মিতরা গ্রামের ফরশেদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ আলীর বাগানে এ ঘটনা ঘটে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই কান্ড ঘটিয়েছে বলে দাবী করছেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী।
রাতের আঁধারে জমির সিমানা পিলার,নেটজালের বেড়াসহ বাগানের বিভিন্ন দেশী-বিদেশী প্রজাতির গাছ চুরি করে বাগান ধ্বংসসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ করে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন পূর্ব মিতার গ্রামের ফরশেদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ আলী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়;গত ১৯’নভেম্বর শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১ ঘটিকা হতে ২ ঘটিকা রাত আনুমানিক ১১ ঘটিকা হতে ২ ঘটিকা সময়ে সদর উপজেলার পূর্ব মিতরা গ্রামের বিবাদী ১।গোবিন্দ ঘোষ(৫৩),২।অরবিন্দ ঘোষ(৪৮),উভয় পিতা মৃত রাধা রমণ ঘোষ,৩।মনোরঞ্জন ভুমিক(মানিক)(৫০),পিতা মৃত মনি ভৌমিক,৪। দেলোয়ার হোসেন (৬০),পিতা মৃত হাফেজ উদ্দিন, ৫।শুভ ঘোষ(২৫),৬।টিটু ঘোষ(২২) উভয় পিতা গোবিন্দ ঘোষ,৭।শিল্পী রানী ঘোষ(৪৫),স্বামী গোবিন্দ ঘোষ গণ ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলীর পিতা মোঃ ফরশেদ আলমের স্বত্ব দখলীয় জমিতে অনধিকার পূর্বক প্রবেশ করে জমিতে লাগানো দেশী-বিদেশী প্রজাতির চারা ও ফলনশীল আম,জাম,লিচু,কমলালেবু,কটরেবু,ডালিম,পেঁপে,পেয়ারা গাছসহ বিভিন্ন প্রকার কাঠ গাছ কেটে ও শেকড় সহ উপড়ে ফেলে কিছু গাছ রেখে সব গাছ নিয়ে যায় ।এছাড়াও জমির চারপাশে ১৮টি সিমেন্টের সিমানা পিলার সহ ২২০ টি বাশের খুটি ও নেটজালের বেড়া উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং পাশের মসজিদের পুকুরে কিছু ফেলে দিয়ে যায় ।উক্ত ঘটনার খবর পেয়ে মোহাম্মদ আলী তার স্ত্রীসহ প্রতিবেশীদের নিয়ে জমিতে গেলে বিবাদীগণ ফলনশীল গাছ কাটায় ব্যবহৃতদেশীয় অস্ত্র দা,কোড়াল,শাবল,খুন্তি ইত্যাদি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। পরবর্তীতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবিষয়ে থানা বা কোর্টে মামল করলে মোহাম্মদ আলীকে স্বপরিবারে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি প্রদান করে।
ভূক্তভোগী মোহাম্মদ আলী বলেন,“ আমি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “এ ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবেনা” নির্দেশনা বাস্তবায়নে করোনাকালীন সময়ে আমার বাবার ক্রয়কৃত ১৯ শতাংশ জমিতে বিভিন্ন দেশী-বিদেশী প্রজাতির ফলজ ও ভেষজ গাছ দিয়ে বাগান করেছিলাম।কিছু গাছে গত সিজনে ফলন এসেছিলো ।বাকি গাছগুলোও কয়েক মাসের মধ্যেই ফলন দিতো । গোবিন্দ ঘোষ ও অরবিন্দ ঘোষ তার পরিবার এবং দলবল নিয়ে গত শনিবার রাতে আমার জমিতে প্রবেশ করে বাগান নষ্ট করে গাছসহ সিমানার পিলার,বাশের খোটা,নেট জাল চুরি করে নিয়ে গেছে ।বাগান পরিচর্যা, ভূমি উন্নয়ন, চারা কেনা, চারা রোপণ ,শ্রমিক খরচসহ আমার প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে ।পূর্বেও শত্রুতাবসত তারা বাগানের গাছ কেটেছিলো।আমি এঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই ।”
এ বিষয়ে গোবিন্দ ঘোষ বলেন,“ অভিযোগটি মিথ্য।আমাদের উপর জুলুম করছে। আমরা হিন্দু মানুষ।আমি বা আমার পরিবারের কেউই বাগানের গাছ কাটিনি ।”
মোহাম্মদ আলী শক্তির বলে জায়গার দখল নিয়েছে অভিযোগ করে গোবিন্দ ঘোষ দাবী করেন বাগানের জায়গাটিও ওয়ারিশ সূত্রে তাদের।
উল্লেখ্য;দলিল সুত্রে জানা যায়, মিতরা এলাকার কৃষ্ণপট্রি মৌজার উক্ত ১৯ শতক জমির ক্রয়সুত্রে মালিক মোহাম্মদ আলীর পিতা মোঃ ফরশেদ আলম ।কৃষ্ণপট্রি মৌজার এস এ ৫৫,আর এস ৮৩, জমির মুল মালিক টেনুরাম ঘোষের স্ত্রী কুবজা সুন্দরী গোপীনির নিকট হতে বিগত ১৩/০৭/১৯৭২ ইং তারিখে ৮০৭১নং দানপত্র দলিলে সুরধনী গোপীনি বর্নিত ভুমির মালিক হন।সুরধনী ঘোষ জমির দখল থাকিয়া বিগত ০৬/০৬/১৯৮৫ ইং তারিখে ২৩৭২ নং দলিল মুলে সম্ভুনাথ ঘোষের নিকট সাব কবলায় বিক্রয় করেন। এরপর সম্ভুনাথ ঘোষ ২৫/১১/১৯৮৬ ইং তারিখে ৮১৪৭ নং দলিল মুলে বর্নিত ১৯ শতাংশ জমি মোঃ ফরশেদ আলমের নিকট সাব কবলায় বিক্রয় করেন এবং বর্তমানে মোঃ ফরশেদ আলমের ভোগ দখলেই রয়েছে জমিটি।
Leave a Reply