1. admin@deshprokash24.com : Admin : Asraful Islam
মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

বাইডেন-শি বৈঠক: উত্তেজনা কমলেও বিরোধ থাকছেই!

  • আপডেট সময় : সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক.

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বৈঠক হয়েছে গত ১৪ নভেম্বর। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-টুয়েন্টি সম্মেলনের আগে বিশ্বের প্রভাবশালী দুই দেশের নেতার মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তাদের এই বৈঠক প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে। সাক্ষাতের শুরুতে দুই নেতা সাংবাদিকদের সামনে হাসিমুখে করমর্দন করেন। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হবার পর এটি দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হলেও এর আগে তারা পাঁচ বার ফোন ও ভিডিও কলে কথা বলেছিলেন।

বৈঠকের পর হোয়াইট হাউজ জানায়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন চীনা প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলবে, কিন্তু তা সংঘাতে পরিণত হতে দেওয়া উচিত হবে না। তিনি এ ব্যাপারেও একমত হন যে, মুখোমুখি কথা বলার চেয়ে ভালো বিকল্প খুব কমই আছে। বাইডেন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো নতুন ঠাণ্ডা যুদ্ধ শুরু হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। তিনি দাবি করেন, তিনি এবং শি জিনপিং পরস্পরকে বোঝেন এবং বেইজিং বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা পালটে দিতে চায় না। বৈঠকে তিনি চীনের শিনজিয়াং ও তিব্বত অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাইওয়ানের ব্যাপারে চীন যে জবরদস্তিমূলক এবং আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিচ্ছে তারও বিরোধিতা করেন বাইডেন।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট শি বলেন, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক যেন যথাযথভাবে রক্ষিত হয় তা সারা বিশ্ব প্রত্যাশা করে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, শি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, তাইওয়ানের অবস্থান চীনের স্বার্থের কেন্দ্রস্থলে। দ্বীপটিকে চীন তার নিজের অংশ বলেই মনে করে। গত আগস্টে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর বেইজিং ক্ষিপ্ত হয় এবং চীন-মার্কিন সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। চীন জলবায়ু এবং কোভিড মহামারি সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। স্থগিত করে দেয় সামরিক যোগাযোগও। প্রেসিডেন্ট শি বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন এমন একটি অবস্থায় আছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এখানে দুই-দেশের নেতা হিসেবে আমাদের সঠিক গতিপথ নির্ধারণ করতে হবে।

সম্প্রতি বাণিজ্য, তাইওয়ান প্রশ্ন, ইউক্রেন যুদ্ধ, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ইত্যাদি একাধিক বিষয়কে কেন্দ্র করে চীন-মার্কিন সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, এক দেশ আরেক দেশের কোনো আচরণকে ভুল বোঝার ফলে একটা যুদ্ধ বেধে যাক—এটা কোনো পক্ষই চাইছে না। দুই দেশের মধ্যে আকস্মিকভাবে বড় কোনো সংঘাত বেধে যাওয়া ঠেকানো যায়, এমন কিছু পদক্ষেপের ব্যাপারে দুই নেতা একমত হতে পারলে সেটাই হবে এই বৈঠকের বড় অগ্রগতি।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এ রকম কিছু ঠেকানোর ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ‘স্পষ্ট  যোগাযোগের চ্যানেল’ এবং ‘কিছু লাল রেখা অতিক্রম না করার নীতি’ থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

একজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, তৃতীয় কোনো দেশে বড় সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার এ ধরনের বৈঠক যদিও কিছুটা ‘গণমাধ্যমকে দেখানোর জন্যই’ আয়োজন করা হয়, তবে এগুলো সম্পূর্ণ অর্থহীন নয়। হংকং-এর চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিয়ের ল্যান্ড্রি বলেন, এসব বৈঠকেও কখনো কখনো রাজনৈতিক অচলাবস্থা কেটে গেছে এমন নজির আছে।

সিএনএনের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, বাইডেন-শি’র বৈঠকের পর বিশ্ব কিছুটা সহজে নিঃশ্বাস নিতে পারে। তবে দুই দেশের উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হলেও একবিংশ শতাব্দীর দুটি পরাশক্তি এখনো বৈরিতার পথে রয়েছে। সংকটের সময়ে নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নেতাদের মধ্যে এই ধরনের যোগাযোগের অভাবে ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে রুশ অচলাবস্থা এখন এত বিপজ্জনক মোড় নিয়েছে। বালিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, নেতারা এখনের মতো সংঘাত এড়াতে চান।

বৈঠকের পর বাইডেন বলেছেন যে, তিনি শি’কে আরো সংঘর্ষমূলক বা আরো সমঝোতামূলক মনে করেননি। এই ধরনের ভাষ্য সম্পর্কের সবচেয়ে অস্থির ইস্যুগুলোতে মতবিরোধেরই ইঙ্গিত দেয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দেশ প্রকাশ 24

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা/সংবাদ, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।

Theme Customized By Shakil IT Park