1. admin@deshprokash24.com : Admin : Asraful Islam
মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন

“সিত্রাং” আঘাত হানতে পারে আজ; ঝুঁকিতে উপকূলীয় ১৯ জেলা

  • আপডেট সময় : সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২

নিউজ ডেস্ক.

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি গতকাল রবিবার রাত ৯টার দিকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়সিত্রাং’-রূপ এপরিগ্রহ করে বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। আজ সোমবার রাতের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলভাগে আঘাত হানতে পারে সিত্রাং।

অমাবস্যা তিথি, সূর্যগ্রহণ বায়ুচাপ পার্থক্যে আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা চরাঞ্চলগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ থেকে ১২ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এই জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা হবে অনেক বেশি। কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা অব্দি দেশের ১৯টি জেলা ঝুঁকিতে আছে। সিত্রাংভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্মঅর্থাৎ খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। সাত ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড় আছে। শক্তির দিক থেকে সিত্রাং নম্বরে।  

গতকাল রাত ৯টায় মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৫ কিলোমিটারের ভেতরে বাতাসের একটানা গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়া আকারে ৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সাগর ফুঁসছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের সকল সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য আঘাতের কথা চিন্তা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় গতকাল সভা করেছে।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জানান, সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ১৯ জেলার ৭৩০ কিলোমিটার উপকূল জুড়ে আঘাত হানতে পারে। এটির গতিবেগ হতে পারে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এ জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এনামুর রহমান আরো বলেন, গত তিন বছরে যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছে তার মধ্যে এর কভারেজ এলাকা সবচেয়ে বেশি। দেশের উপকূলীয় সব জেলায় জরুরি খাবার, উদ্ধার সরঞ্জামসহ ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী অবস্থা মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার।

এদিকে বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করে দ্রুত সময়ে তীরে ফিরতে অনুরোধ করা হয়েছে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় গতকাল রাত থেকে কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি কোথাও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে আজ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত উপকূলীয় অঞ্চলসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবি)। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র পুরো বরিশাল বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে খুলনা বিভাগের উপকূলেও। স্থলভাগে আঘাত করার সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে প্রবেশ করে ঢাকা বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে অতিক্রম করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে প্রবেশের সম্ভাব্য সময় আজ সোমবার সকাল ৯টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। বাংলাদেশ অতিক্রম করতে ১৮ ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। ২৪ অক্টোবর দিবাগত রাত অমাবস্যা হওয়ায় উপকূলীয় এলাকা ও চরাঞ্চলগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ থেকে ১০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। নোয়াখালীর ভাসানচর, হাতিয়া, সুবর্ণচর, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও ভোলার মনপুরায় ১০-১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সিডরের পর উপকূলীয় এলাকায় সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হতে পারে সিত্রাং।ঘূর্ণিঝড়ের ভারী বৃষ্টি, শক্তিশালী বাতাস ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া দেশ প্রকাশ 24 কে জানান, সিত্রাংয়ের প্রভাবে আজ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত উপকূলীয় অঞ্চলসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আগামীকাল মঙ্গলবার ভোরে দেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ভারী বর্ষণের ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু স্থানে আকস্মিক বন্যা এবং পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মহুরী, মনু, খোয়াই, সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীর পানি সমতলে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। সময় বিশেষে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যে আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলায় বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দেশ প্রকাশ 24

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা/সংবাদ, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।

Theme Customized By Shakil IT Park