ঠিকাদারের অবহেলায় জলে যেতে বসেছে ১০ কোটির বেশি টাকা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে লৌহজং নদীর উপর সেতু নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ঠিকাদার নানা অযুহাতে নির্মাণ কাজ ফেলে রাখায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন মির্জাপুরসহ ৩ উপজেলার লাখ লাখ মানুষ।
কামারপাড়া এলাকার গবড়া গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা সদরের বাইমহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. ফরহাদ হোসেন জানান, লৌহজং নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি ছিল তাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। এখানে একটি সেতু না থাকায় মির্জাপুর উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল ভাওড়া, বহুরিয়া ও ওয়ার্শি ইউনিয়ন এবং পাশের ধামরাই ও সাটুরিয়া উপজেলাবাসীর যোগাযোগের ক্ষেত্রে ছিল চরম দুর্ভোগ। বর্ষাকালে খেয়া নৌকা এবং শুকনো মৌসুমে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই ছিল একমাত্র ভরসা।
সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুর সার্বিক সহযোগিতায় সেতু নির্মাণ কাজ গত তিন বছর আগে শুরু হয়। কিছু কাজ করার পর ঠিকাদার নানা অযুহাতে কাজ ফেলে রেখেছেন। ফলে সেতু নির্মাণ আদৌ হবে কী না তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র জানান, মির্জাপুর উপজেলার কামারপাড়া এলাকায় লৌহজং নদীর উপর ১০ কোটি ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৬শত ৯৪ টাকা ব্যয়ে ৯০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯ দশমিক ৮ মিটার প্রস্থ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। সেতু নির্মাণ কাজ করছেন মেসার্স অসীম সিং এন্টারপ্রাইজ। নানা কারণে ঠিকাদার সেতু নির্মাণ কাজে গাফিলতি করছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঠিকাদারকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করতে বলা হয়েছে।
মেসার্স অসিম সিং এন্টারপ্রাইজের সাব ঠিকাদার মো. রবিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পিসি গার্ডারসহ বেশ কিছু কাজ হয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি ও আর্থিক সমস্যাসহ নানা কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। আশা করা হচ্ছে আগামী বছর কাজ শেষ হবে।
উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার (এলজিইডি) মো, আরিফুর রহমান বলেন, ঠিকাদারকে সেতু নির্মাণ কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে। সেতুটির নির্মাণ কাজ না হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply