1. admin@deshprokash24.com : Admin : Asraful Islam
শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১২:৫০ অপরাহ্ন

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব পড়বে উন্নয়নশীল বিশ্বে

  • আপডেট সময় : শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২

ডেস্ক রিপোর্ট.

চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব উন্নয়নশীল বিশ্বেও পড়বে। এসব দেশগুলোর রপ্তানির প্রধান গন্তব্য উন্নত বিশ্ব। আর উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক দুরবস্থার প্রভাবে বিশ্বের সব দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, আগামী বছর বিশ্বের প্রায় সব দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমবে। সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হার আরো বাড়তে পারে। 

শুধু তাই নয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বিশ্ব জুড়ে নীতি সুদ বৃদ্ধিজনিত কারণে যে মন্দাভাব বিরাজ করছে, তার প্রভাবে বিনিয়োগ কমবে, বাড়বে বেকারত্ব। এসব কারণে শ্রমের মূল্য কমে যাবে বলেও আশঙ্কা করা হয়েছে। আইএমএফ বছরে দুবার বিশ্ব অর্থনীতির পূর্বাভাস প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এপ্রিল ও অক্টোবরে। এবার অক্টোবরে মূল প্রতিবেদন প্রকাশের আগে বিভিন্ন বিশ্লেষণ প্রকাশ করা হচ্ছে।

সম্প্রতি আইএমএফের প্রধান (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা ওয়াশিংটনের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তৃতা করেন। এ সময় তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এবং বিশ্বমন্দার বিষয়ে সতর্ক করে বক্তৃতা দেন।

তিনি বলেন, বিশ্বমন্দার ঝুঁকিগুলো আরো বেড়েছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি বিশ্বের এখন এক-তৃতীয়াংশ দেশ এ বছর না হলেও আগামী বছর মন্দায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে। পরপর দুটি ত্রৈমাসিক হিসাবে তাদের প্রবৃদ্ধি না হয়ে বরং অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে যাবে। গত বছর আইএমএফ ধারণা করেছিল বিশ্ব অর্থনীতি এ বছর ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসবে, যা আগামী বছর আরো কমে ২ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে যেতে পারে। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শুরু করলেও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নতুন নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। শুধু নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নয়, এখন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে অর্থ উন্নত দেশে চলে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

মন্দা কেন আসবে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলে উত্পাদন কমে আসবে। চলমান অর্থনৈতিক সংকটে অর্থনীতির যে ক্ষতি হচ্ছে ২০২৬ সাল নাগাদ তার আকার ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ হতে পারে। জর্জিয়েভা বলেন, ক্ষতির এই পরিমাণ জার্মানীর মতো বড় অর্থনীতির দেশের সমান। তবে বিশ্ব অর্থনীতির কতটা ক্ষতি হবে সেটা আনুমানিক ধারণা, এই ক্ষতি আরো বড় হতে পারে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এই ভবিষ্যদ্বাণী এমন সময়ে আসল যখন তেল উত্তোলনকারী দেশগুলো তাদের তেলের উত্পাদন কমানোর কথা জানিয়েছে। এই ঘোষণা অর্থনীতিকে আরো এক ধাক্কা দিতে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে যখন এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করা হয়েছে, তখনই রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতির পরিবর্তন করেছে। আইএমএফের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এই মুহূর্তে চীন এখনো মহামারি সম্পর্কিত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

অন্যদিকে রাশিয়া ইউরোপের দেশগুলোতে কম গ্যাস সরবরাহ করায় সেখানকার অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও অর্থনীতির গতি মন্থর। মূল্যস্ফীতির চাপে ভোক্তাদের চাহিদা কমেছে।

আইএমএফের প্রধান বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে অনেক দেশের পক্ষে মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের আনা কঠিন হয়ে যাবে, যার প্রভাবে অনেক দেশের অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদি মন্দার দিকে চলে যাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে আইএমএফ প্রধান বলেছেন, এখন দেশগুলোর প্রধান লক্ষ্য হতে হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু মুদ্রানীতি অতটা কঠোর করা যাবে না। কিন্তু অনেক বড় বড় দেশ খুব দ্রুত নীতি সুদ হার বাড়িয়ে যাচ্ছে। ঋণের খরচ বেড়ে গেলে সেটি উত্পাদন কমিয়ে দেবে। আর উত্পাদন কমে গেলে বেকারত্ব বেড়ে যাবে। ফলে দীর্ঘমেয়াদি সংকট তৈরি হবে। এজন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ ধাপে ধাপে নিতে হবে। দ্বিতীয়ত, মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সহায়তা বৃদ্ধি করতে হবে। জীবনযাত্রার খরচ যেভাবে বেড়ে গেছে সেই অবস্থা থেকে উত্তরণে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সুবিধা বাড়াতে হবে।

তৃতীয়ত, উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ ডলারের বিপরীতে প্রায় সব দেশের মুদ্রা মান কমে গেছে। তাছাড়া সুদ হার বৃদ্ধি পাওয়ায় উন্নত দেশগুলোতে অর্থ চলে যেতে পারে বা পাচারও হতে পরে। এক হিসাবে দেখা গেছে আগামী তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসের মধ্যে উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে উন্নত বিশ্বে অর্থের প্রবাহ ৪০ শতাশ বাড়তে পারে। এটা নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। তাছাড়া নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। নিম্ন আয়ের অন্তত ৬০ শতাংশ দেশ ঋণ সংকটে পড়বে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব দেশের ঋণ সংকট কাটাতে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দেশ প্রকাশ 24

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা/সংবাদ, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।

Theme Customized By Shakil IT Park