মহান আল্লাহ বলেন, মানুষের হিসাবের সময় সন্নিকটে, অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ১)
এ আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা বলছেন, মানুষের কৃতকর্মের হিসাব গ্রহণের সময় অর্থাৎ কিয়ামতের সময় ঘনিয়ে এসেছে। আগের সুরার শেষে আল্লাহ কিয়ামত দিবসের জন্য মানুষের অপেক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন। উল্লিখিত আয়াতে হিসাবের সময় ঘনিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।
মূলত জগৎ সৃষ্টির পর যে সময় অতিবাহিত হয়েছে সেই তুলনায় অবশিষ্ট সময় অতি সামান্য। তাই মানুষ যেন দুনিয়ার চাকচিক্যে মোহগ্রস্ত হয়ে উদাসীন হয়ে না পড়ে এবং আল্লাহর প্রেরিত রাসুলের নির্দেশনা পালন করে। কাফিররা ঔদ্ধত্যের সঙ্গে কিয়ামতের প্রতীক্ষার কথা বলত। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,
“তারা কি শুধু এই অপেক্ষায় রয়েছে যে কিয়ামত তাদের কাছে হঠাৎ এসে পড়ুক। বস্তুত কিয়ামতের লক্ষণগুলো তো এসেই পড়েছে। সুতরাং এসে পড়লে তারা কিভাবে উপদেশ গ্রহণ করবে? ” (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত : ১৮)
কিয়ামতের দিন নিকটবর্তী হওয়ার ব্যাখ্যা হলো, সৃষ্টির সূচনাকাল থেকে অসংখ্য নবী-রাসুল (আ.) মানুষকে দ্বিনের দাওয়াত দিতে দুনিয়ায় এসেছেন। সর্বশেষ মুহাম্মদ (সা.) এসেছেন। এরপর আর কোনো নবী-রাসুল আসবেন না। তাই জগৎ সৃষ্টির শুরু থেকে এক দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর অতিবাহিত সময়ের তুলনায় অবশিষ্ট সময় খুবই অল্প। যেমন রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি এমন সময় এসেছি যখন কিয়ামত এই দুইয়ের মতো। ’ তখন তিনি তর্জনি ও মধ্যমা আঙুলকে মিলিয়ে দেখান। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩০১)
অতীতের উম্মতের তুলনায় শেষ উম্মতের সময় খুবই কম। যেমন হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমাদের আগে যারা ছিল তাদের তুলনায় তোমাদের সময় আসরের নামাজ থেকে সূর্যাস্তের সময় পর্যন্ত। ” (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০২১)
অপর হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতের দিন বান্দা (চারটি) প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত দুই পা সরাতে পারবে না।
১. কোন কাজে জীবন ব্যয় করেছে ।
২. ইলম অনুসারে কেমন আমল করেছে।
৩. কোন খাত থেকে সম্পদ উপার্জন করেছে এবং কোথায় তা ব্যয় করেছে ।
Leave a Reply