1. admin@deshprokash24.com : Admin : Asraful Islam
মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন

বাড়ছে শিশুরোগ ‘হ্যান্ড-ফুট-মাউথ’

  • আপডেট সময় : রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

 আফিয়া জাহান .

শিশুদের হাতেপায়েমুখে ফুসকুড়ি দেখা যায়। হাতে একটু একটু থাকলেও পরে তা বেড়ে যায়। হাতে, মুখে, পায়ে, হাঁটুতে ছড়িয়ে পড়ে। সময় শরীরে জ্বর  থাকে ও  ফুসকুড়িগুলো চুলকায়

চিকিৎসকেরা জানান, বিশেষ একটি ভাইরাসের কারণে এই ‘হ্যান্ড-ফুট-মাউথ’ রোগ হয় । এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ, পাঁচ থেকে সাত দিন থাকবে। একই রকম উপসর্গ দেখা দেয় হাত-পায়ে-মুখের মধ্যে বড়দের ব্রোনের মতো ফোসকা হয়। পরে তা শরীরের অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। মুখের ভেতরেও হয় বলে কিছুই খেতেও পারে না বাচ্চারা।

শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছে, কক্সস্যাকি ভাইরাস নামে একটি ভাইরাসের কারণে এ রোগ হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে দেশে এই রোগ দেখা যায়। এই রোগে মৃত্যু কিংবা গুরুতর অবস্থা হওয়ার আশঙ্কা না থাকলেও অনেক বেশি ছোঁয়াচে বলে রোগীকে পৃথক ও সাবধানে রাখার পরামর্শ দেন তারা। এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ না থাকলেও অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন।

কী এইহ্যান্ডফুটমাউথ

দেশের খ্যাতনামা শিশুবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ্ বলেন, কয়েক বছর আগে আমাদের দেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ বছর বেশি দেখা যাচ্ছে। আমি প্রতিদিন হ্যান্ডফুটমাউথে আক্রান্ত ৮ থেকে ১০ জন শিশুকে পাচ্ছি। সাধারণত এক বা দেড় বছর বয়স থেকে ১০ বছর বয়সি শিশুদের এ রোগ হয়। এর মধ্যে পাঁচ বছর বয়সিদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। রোগ খুব ছোঁয়াচে বলে রোগীকে পৃথক রাখার পরামর্শ দেন চিকিত্সকরা। ফুসকুড়িগুলো দুই তিন দিনের মধ্যে রসালো দেখা যায়। এ সময় ফেটে গেলে সেই রস কারো গায়ে লাগলে তার এই রোগ হতে পারে। আবার রোগীর সংস্পর্শে এলে হাত মেলালে, হাঁচি-কাশি থেকেও রোগটি ছড়াতে পারে। এগুলোকে অনেকে বসন্ত ভেবে ভুল করেন। কিন্তু এটি বসন্ত রোগ না।

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল-২ (মা ও শিশু)-এর নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক ডা. অমৃত লাল হালদার বলেন, প্রতিদিন ১০ জন রোগীর মধ্যে দুই থেকে তিন জন ‘হ্যান্ডফুটমাউথ’ রোগে আক্রান্ত শিশু আসে। এ বছর রোগটির প্রকোপ বেশি। সাধারণত ভাইরাসের প্রভাবে ‘হ্যান্ডফুটমাউথ’ রোগ হলে গা ব্যথা, মাথা ব্যথা জ্বরসহ গায়ে র‌্যাস দেখা দেয়। কারো কারো জ্বর নাও হতে পারে। চামড়ার ওপরে হাতে, পায়ের পাতায়, কনুই ও হাঁটুতে ফুসকুড়ি দেখা যায়। রোগটি সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন থাকে। অনেক শিশুর মুখের মধ্যেও ফুসকুড়ি হয়। ফলে ব্যথার জন্য শিশু সহজে খেতে পারে না। তবে খাওয়ায় অরুচি থাকে না। খাবারের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু এলার্জি হয় যে সব খাবারে, রোগীকে তা না দেওয়াই ভালো।

বর্ষার শেষে বেশি হয়

অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা জানান, সাধারণত বর্ষার শেষে ও শরতের শুরুতে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে এ রোগ হয়। শিশু এতে আক্রান্ত হলে তাকে অবশ্যই স্কুলে দেওয়া যাবে না। পরিবারের মধ্যেও একধরনের আইসোলেশনে তাকে রাখতে হবে।

চিকিৎসা কী হবে

চিকিৎসকেরা জানান, এ রোগের কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ নেই। অধ্যাপক সহিদুল্লা বলেন, হ্যান্ডফুটমাউথে আক্রান্ত শিশুদের জ্বর হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দিতে হবে। আর চুলকানি হলে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ফেক্সো জাতীয় চুলকানির ওষুধ বা ক্যালামাইন দিতে হবে। তাকে যথেষ্ট পানি খাওয়াতে হবে। রোগীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, হাত পরিষ্কার রাখা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো এবং একই সঙ্গে মুখে গোটা হলে না খেতে চাইলে জোরাজুরি না করা,অসুখ যাতে ছড়াতে না পারে, মলমূত্র যেন স্বাভাবিক হয় সে দিকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা সহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দেশ প্রকাশ 24

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা/সংবাদ, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।

Theme Customized By Shakil IT Park