ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী নিশাত তাসনিম উর্মির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।আবনাব আবিব প্রত্যয় নামে নিহত উর্মির ১৩ মাস বসয়ী একটি ছেলে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে মেহেরপুরের গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, তাকে হত্যার পর হাসপাতালে এনে নাটক সাজিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ইতোমধ্যে নিহতের স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহতের সহপাঠীরা জানান, স্কুলে পড়ার সময় গাংনীর পদ্মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাসেম শাহর ছেলে আসফাকুজ্জামান প্রিন্সের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় উর্মির৷ পরে কলেজে উঠলে তাদের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে প্রত্যয় নামে ১৩ মাস বয়সী একটা ছেলে সন্তান আছে।
উর্মির বাবা গোলাম কিবরিয়া বলেন, গভীর রাতে বেয়াই হাসেম শাহ মোবাইল ফোনে জানান, মেয়ে উর্মি অসুস্থ হওয়ায় তাকে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে। অসুস্থতার কারণ জানতে চাইলে উর্মীর ঘরের জানালার সঙ্গে ফাঁস দিয়েছে বলে জানানো হয়। সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে জানতে পারি মেয়ে অনেক আগেই মারা গেছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘উর্মির শরীরে আঘাতের আলামত রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। অভিযুক্ত প্রিন্স ও তার বাবাকে আমরা আটক করেছি। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করেছে উর্মির পরিবার। তবে হত্যার বিষয়ে অস্বীকার করেছে প্রিন্স। তবে যৌতুকের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা অনুমান করছি।’
বিভাগের সভাপতি ড. মিঠুন মুস্তাফিজ বলেন, একদোলা সোনার টুকরো বাচ্চা মাকে চিনে ওঠার আগেই চিরতরে সব হারিয়ে ফেললো। পরিবার হারালো তার সন্তান, আশা, স্বপ্নকে। মা-বাবা, স্বামী, সন্তানকে এক সাগর শোকে ভাসিয়ে চলে গেল ঊর্মী। বিভাগের সহপাঠীরা শোকে মুহ্যমান। তারা এখন মেহেরপুরের গাংনীতে ঊর্মীর বাসায়। তার মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। শোকার্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
ঊর্মীর অকাল মৃত্যুতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ফোকলোর স্টাডিজ পরিবার গভীর উর্মির মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ইংরেজি বিভাগ, বিভিন্ন সমিতি, পরিষদ, সহপাঠীরা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠগুলো ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীরা শোক প্রকাশ করেছেন। একইসাথে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তারা ।
Leave a Reply