সোমবার প্রাদেশিক সেচমন্ত্রী জানান, বাঁধ কেটে দেওয়ার পরও হ্রদের পানির স্তর ‘কমেনি’। পাকিস্তানের খাদ্য সরবরাহের অর্ধেকই উৎপন্ন হয় সিন্ধু প্রদেশে, এখন এই প্রদেশ ভয়াবহ বন্যায় ভাসতে থাকায় ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে থাকা পাকিস্তানের অনেকে গুরুতর খাদ্যসংকটের মুখোমুখি হতে পারে বলে শঙ্কা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। পাকিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, দেশের ৩ কোটি ৩০ লাখ লোক বন্যার কবলে পড়েছে এবং এ পর্যন্ত ৪৫৮ শিশুসহ ১ হাজার ৩১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বন্যায় অন্তত ১০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক এক হিসাবে ধারণা পাওয়া গেছে।
মানছার হ্রদের বাড়তে থাকা পানিতে দুটি শহর তলিয়ে গেলে ঐ দিন কর্মকর্তারা হ্রদের একটি বাঁধ কেটে দেন। এতে হ্রদের পানি কমে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো রক্ষা পাবে বলে আশা করেছিলেন তারা। কিন্তু এই পদক্ষেপে প্রায় ৪০০ গ্রাম ডোবার ঝুঁকি তৈরি হয় আর মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছাড়ার শঙ্কার মুখে পড়েন। ইতিমধ্যেই কর্মকর্তারা গ্রামবাসীদের বাড়ি ছেড়ে যেতে বলেছেন। সোমবারও হ্রদের পানির স্তর বিপজ্জনক উচ্চতায় ছিল বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কয়েক বছরের মধ্যে জলবায়ুজনিত সবচেয়ে মারাত্মক দুর্যোগের কবলে পড়েছে পাকিস্তান। নজিরবিহীন ভারী বৃষ্টি ও দেশের উত্তরাঞ্চলের পবর্তগুলোর হিমবাহ গলা পানিতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয় এবং দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে যায়।
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ বলেছে, পানযোগ্য পানির ঘাটতি থাকায় পাকিস্তানে বহু শিশু বিভিন্ন রোগে ভুগে মারা যেতে পারে। মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তান জুড়ে এ বন্যা দেখা দিয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ বন্যা জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা দেশগুলোর সঙ্গে সবচেয়ে কম প্রভাব রাখা দেশগুলোর মধ্যে তীব্র বৈষম্যের বিষয়টি সামনে এসেছে। বৈশ্বিক গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমণে পাকিস্তানের অবদান ১ শতাংশের কম হলেও দেশটির ভৌগোলিক আকার ও অবস্থান একে জলবায়ু পরিবর্তনের মুখে অত্যন্ত ভঙ্গুর করে তুলেছে।
Leave a Reply