1. admin@deshprokash24.com : Admin : Asraful Islam
শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন

নাজাতের উপায় ‘তাওবাতুন নাসূহা’

  • আপডেট সময় : সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০২২

মোঃ তাজুল ইসলাম, ধর্মীয় প্রতিবেদক.

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল ও পরিভাষা হলো তাওবা। তাওবা বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি ও প্রতিনিধি মানুষের জন্য বড় নেয়ামত, করুণা ও দয়া। এর মাধ্যমে মানুষ পাপ-পঙ্কিলতা মোচন করে। পবিত্র কোরআনুল কারিমে মুমিনগণকে বারবার তাওবা ও ইসতেগফার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাওবা ও ইসতেগফারের জন্য ক্ষমা,পুরস্কার ও মর্যাদা ছাড়াও জাগতিক উন্নতি ও বরকতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। মুমিন মুসলমানের দুনিয়া ও পরকালের নাজাতের উপায় ‘তাওবাতুন নাসুহা’।

কোরআনুল কারিমের পাশাপাশি একাধিক হাদিসে ইসতেগফারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা দেখেছি, ইসতেগফার আল্লাহর অন্যতম জিকর। জিকরের সাধারণ ফজিলত ইসতেগফারকারী পেয়ে থাকেন। এ ছাড়াও ইসতেগফারের রয়েছে অতিরিক্ত সওয়াব ও মর্যাদা।

ইসতেগফার শব্দের অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা করা। ইসতেগফার শব্দটি মূলত মাগফেরাত  শব্দ থেকে এসেছে ; যার শাব্দিক অর্থ ঢেকে দেওয়া, পর্দা করা। প্রকৃতপক্ষে বান্দা  ইসতেগফার করে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তাআলা তাঁর পাপী বান্দাকে অনুগ্রহ ও ক্ষমার চাদরে ঢেকে দেন।

তাওবার পারিভাষিক অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ তাআলার কাছে লজ্জিত, অনুতপ্ত হয়ে অন্যায়-অসৎ কাজ থেকে প্রত্যাবর্তন এবং ভবিষ্যতের জন্য সৎ ও ন্যায় কাজের সংকল্প করা। এরপর সৎ কাজের দ্বারা অতীতের সব অসৎ কাজের ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করা। অর্থাৎ পাপের পথ ছেড়ে পুণ্যের পথে ফিরে আসা।

কাউকে শারীরিক-মানসিক কষ্ট দেওয়া, মান-সম্মান নষ্ট করা, দুর্নাম করা এবং মিথ্যা অপবাদ দেওয়া ও সম্পদ হানি করা; এসবই মানুষের হক নষ্ট করার অন্তর্ভুক্ত। কারো কোনো হক নষ্ট করে থাকলে যথাসম্ভব তার ক্ষতিপূরণ করতে হবে বা ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। আল্লাহর হকের মধ্যে কোনো হক (নামাজ, রোজা, জাকাত ও হজ ইত্যাদি) বাকি থাকলে তা তাড়াতাড়ি আদায় করতে হবে। তাওবা সম্পর্কে কোরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ تَوۡبَۃً نَّصُوۡحًا ؕ عَسٰی رَبُّکُمۡ اَنۡ یُّکَفِّرَ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَ یُدۡخِلَکُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ ۙ یَوۡمَ لَا یُخۡزِی اللّٰهُ النَّبِیَّ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ ۚ نُوۡرُهُمۡ یَسۡعٰی بَیۡنَ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ بِاَیۡمَانِهِمۡ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَاۤ اَتۡمِمۡ لَنَا نُوۡرَنَا وَ اغۡفِرۡ لَنَا ۚ اِنَّکَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ

‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, নবী ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না। তাদের আলো তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে। তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয়ই আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।’ (সুরা তাহরিম : আয়াত ৮)

قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ

(হে রাসুল!) আপনি বলুন, হে আমার (আল্লাহর) বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করবেন। তিনি ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।’ (সুরা জুমার : আয়াত ৫৩)

اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)

তাওবাতুন নাসুহা বা একনিষ্ঠ তাওবার শর্ত

১. পাপকাজটি এখনি ছেড়ে দেওয়া।

২. অতীত ভুলের জন্য লজ্জিত হয়ে কান্নাকাটি করা।

৩. ভবিষ্যতে গুনাহের কাজ না করার প্রতিজ্ঞা করা।

৪. বান্দার হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয় আদায় করে দেওয়া। যেমন- ঋণ থাকলে আদায় করে দেওয়া। আর জুলুম ও গিবত করলে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। (মাআরিফুল কোরআন)

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দেশ প্রকাশ 24

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা/সংবাদ, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি ।

Theme Customized By Shakil IT Park