মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের পশ্চিমপাড়া নাছের উদ্দিনের বাড়ি হতে পশ্চিমপাড়া কবরস্থান পর্যন্ত মাটির কাঁচা রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না করাতে বর্তমানে প্রায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ কাঁচা মাটির প্রায় দেড় কিলোমিটারেএ রাস্তাটিতে চলাচল করতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকার প্রায় সহস্রাধিক মানুষ।
সামান্য বৃষ্টি হলেই কাঁদা পানিতে চলাচলকারী মানুষকে জনদুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। ফলে যানবাহন তো দূরের কথা মানুষের পায়ে হেঁটে চলতেও পোহাতে হয় নানান ভোগান্তি। এই কাঁচা রাস্তার সংস্কারের কোনো পদক্ষেপ না থাকায় নিয়মিত চরম ভোগান্তীতে পড়ছেন এলাকাবাসী।
অধুনিক এই সময়েও দেড় কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেটে তার পর যানবাহনে চড়তে হয় মানুষের । মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল ছাড়া এই রাস্তায় অন্য কিছু চলাচলের অনুপযোগী ।এছাড়াও প্রায় ২০ টি পরিবারের চলাচল করতে হয় ফসলি জমির আইল দিয়ে ।
তাছাড়াও বর্ষা মৌসুমে প্রয় দুই থেকে আড়াই মাস পানি ভেঙে,নৌকা-ভেলা ও টিউবে করে চলাচল করতে হয় স্থানীয়দের । তাই বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য মূল রাস্তাটির সাথে নতুন সংযোগ রাস্তা নির্মাণের দাবি পরিবারগুলোর ।
বর্ষার মৌসুমের পর এ রাস্তা গুলোর করুণ অবস্থা দেখার যেন কেউ নেই। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ প্রায় সহস্রাধিক মানুষের চলাচল এ সড়কে। পশ্চিম মকিমপুর গ্রামের চলাচলের একমাত্র এই রাস্তাটির বেহাল দশার কারণে বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েই স্থানীয় জনসাধারণ চলাচল করছেন। অন্যদিকে এলাকার মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ সড়কগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ। সড়কগুলো দীর্ঘদিন থেকে পাকাকরণের দাবি স্থানীয়দের ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তাটি সামান্য বৃষ্টি হলেই একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বৃষ্টির ফোটা পড়ার পরেই কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। এ কাঁদায় চলতে গিয়ে অনেকেই পা পিছলে পড়ে গিয়ে গন্তব্যে যাবার আগেই বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন। শিক্ষার্থীরা সময় মতো স্কুল – কলেজে যেতে পারে না। এই অঞ্চলের পূর্ব ও দক্ষিণ মকিমপুরসহ আশে-পাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচলের জনগুরুত্বপূর্ণ এই গ্রামীণ রাস্তাটি ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, “ প্রতি নির্বাচনের সময় চেয়ারম্যান-মেম্বারর প্রার্থীরা রাস্তাটি ভালো করার আশ্বাস দিয়ে যায় । কিন্তু নির্বাচিত হলে তা বাস্তবায়িত হয়না ।সেলিম চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময় বলেছিলেন নির্বাচিত হয়ে সর্বপ্রথম আমাদের এই রাস্তাটির কাজ করে দেবেন।কি কাজ করেছে তার বাস্তব চিত্র আপনারাই দেখছেন ।”
স্থানীয় আরো অনেকে বলেন, “ কিছু দিন পরেই বর্ষা আসতেছে । বর্ষার পানি আসলে আমরা গৃহবন্দি হয়ে যাই । আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারিনা ।নৌক নিয়ে পাড়াপাড় হতে হয় । সবারতো আর নৌকা নেই ,তাই অনেকে গলা-বুক পানিতে সাতার কেটেও চলাচল করে । বন্যায় আমাদের সকলের খুবই কষ্ট করতে হয় । বন্যার পানি নেমে গেলে রাস্তায় বের হওয়ার অবস্থা থাকেনা । চেয়ারম্যান-মেম্বাররা শুধু আশ্বাস দেয়,তা আর বাস্তবায়ন করেনা । আমরা এই ভোগান্তি থেকে স্থায়ী সমাধান চাই ।”
গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণের কারণে পুরো রাস্তাটি কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল এবং কিছু জায়গায় বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। ফলে মানুষকে জুতা খুলে পথ চলতে হচ্ছে।
এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি আশায় বছরের পর বছর ভোগান্তির স্বীকার এই এলাকার জনসাধারণ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় মেম্বারের কাছে আবেদন জানালেও সড়কের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এ রাস্তাটি পশ্চিম মকিমপুর গ্রামের মানুষের চলাচলে জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাস্তাগুলো পাকা করণে স্থানীয় এলাকাবাসী সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এবিষয়ে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিপ্লব হোসেন সেলিম বলেন, “ প্রাকৃতিক দূর্যোগতো ঠেকানো যাবেনা, তার পরেও আমরা চেষ্টা করবো খুব দ্রুত একটা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য । আর আমার ইউনিয়ন হচ্ছে অন্য ইউনিয়নের চেয়ে বড়,বরাদ্দ আমরা পাই সমান সমান ।আমরা কাজ করতেছি, সব জায়গায়তেই রাস্তা-ঘাট প্রয়োজন,ধারাবাহিক ভাবে হচ্ছে,ওটাও হয়ে যাবে ।”
Leave a Reply